অনলাইন ডেস্ক:

ধনী ভারতীয় ক্রিকেটারদের মাঝে শীর্ষে টেন্ডুলকার, তালিকায় আছেন সৌরভও। ছবি: এএফপি।
আইসিসির মোট রাজস্বের প্রায় ৮০ শতাংশই বিসিসিআইয়ের অবদান। খুব স্বাভাবিকভাবেই আয়ে ফুলে-ফেঁপে ওঠার কথা ভারতীয় ক্রিকেটারদের। ফোর্বস ম্যাগাজিনে আয়ের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ ১০০ অ্যাথলেটদের মধ্যে আছেন বিরাট কোহলি। কিন্তু এখন তো দেখা যাচ্ছে অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটাররাও ভালোই আয় করছেন! ভারতীয় ক্রিকেটারদের মাঝে এখনো যে শীর্ষ ধনীর মুকুট পরে আছেন শচীন টেন্ডুলকার। খুব একটা পিছিয়ে নেই সৌরভ গাঙ্গুলীও।

মনসুর আলী খান পতৌদি একবার বলেছিলেন, ‘আইসিসি যদি হয় ক্রিকেটের কণ্ঠস্বর, বিসিসিআই তাহলে ক্রিকেটের চালানপত্র।’ সহজ কথায়, আইসিসির আয়ের সিংহভাগ আসে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) থেকে। খেলাটির বাণিজ্যিক রাজধানী যে ভারত! তাই ভারতীয় ক্রিকেটারদের অর্থেবিত্তে ফুলে-ফেঁপে ওঠা এমন কোনো বিস্ময়কর তথ্য নয়। বিস্ময়কর হলো ধোনি, কোহলিদের টপকে টেন্ডুলকারের শীর্ষ ধনী হওয়া। অন্তত ভারতীয় স্পোর্টস ওয়েবসাইট স্পোর্টস ক্রীড়ার জরিপে সেটাই জানানো হলো।
সৌরভ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়েছেন নয় বছর হলো। অনেকের মতেই ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রভাব জাগানিয়া অধিনায়ক প্রিন্স অব ক্যালকাটা। ‘গড অব অফসাইড’খ্যাত সাবেক এ ওপেনারের মোট সম্পদের আর্থিক মূল্য দেড় কোটি ডলার (৯৯ কোটি রুপি)। সৌরভ বিসিসিআই থেকে শুধু পারিতোষিক হিসেবেই পেয়ে থাকেন ৫ কোটি রুপি। এ ছাড়া বিভিন্ন এনডোর্সমেন্ট থেকে আসে আরও ২ কোটি রুপি। তাঁর পাঁচটি বিলাসবহুল গাড়ির মোট দাম ৭ কোটি রুপি এবং রয়েছে ৪৫ কোটি রুপির ব্যক্তিগত সম্পত্তি। ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ফ্র্যাঞ্চাইজি দল অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতার যুগ্ম মালিকানা ছাড়াও জি বাংলায় ‘দাদাগিরি আনলিমিটেড’ টিভি শোর সঞ্চালনাও করে থাকেন সৌরভ। শীর্ষ ধনী ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনি দশম।
নয়ে গৌতম গম্ভীর। বর্তমানে ভারতীয় দলে ব্রাত্য হয়ে পড়লেও আয়ে অনেকেই গম্ভীরের পেছনে। ৩৫ বছর বয়সী দিল্লির এ ব্যাটসম্যানের মোট সম্পদের আর্থিক মূল্য ১ কোটি ৫২ লাখ ডলার (১০১.২ কোটি রুপি প্রায়)। বিসিসিআই থেকে তাঁর বার্ষিক আয় প্রায় ১০ কোটি রুপি। এ ছাড়া নানা রকম এনডোর্সমেন্ট থেকে পেয়ে থাকেন আরও ৫ কোটি রুপি। ৮৫ কোটি রুপি মূল্যের ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিক গম্ভীর হ্যামার, মার্সিডিজ বেঞ্জ ও অডি ব্র্যান্ডের তিনটি বিলাসবহুল গাড়ির মালিকও।
শীর্ষ ধনী ক্রিকেটারদের এ তালিকায় আটে রোহিত শর্মা ও সাতে যুবরাজ সিং। রোহিতের মোট সম্পদের আর্থিক মূল্য ১ কোটি ৮৭ লাখ ডলার (১২৪.৫ কোটি রুপি)। যুবির মোট সম্পদের আর্থিক মূল্য ২ কোটি ২৮ লাখ ডলার (১৪৬ কোটি রুপি)। ২ কোটি ৩৪ লাখ ডলার (১৫৯ কোটি রুপি) মূল্যের সম্পদ নিয়ে তালিকাটির ছয়ে সুরেশ রায়না। সবাইকে চমকে দিয়ে তালিকাটির পাঁচে উঠে এসেছেন ইউসুফ পাঠান। তাঁর মোট সম্পদের আর্থিক মূল্য ২ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। ৪ কোটি ডলার (২৫৫ কোটি রুপি) মূল্যের সম্পদ নিয়ে চারে ‘নজফগড়ের নবাব’খ্যাত বীরেন্দর শেবাগ।
চলতি বছর একমাত্র ভারতীয় হিসেবে ফোর্বসের শীর্ষ আয় করা ক্রীড়াবিদদের তালিকায় জায়গা করে নেওয়া কোহলি এ তালিকায় তৃতীয়। ভারতীয় অধিনায়কের মোট সম্পদের আর্থিক মূল্য ৬ কোটি ডলার (৩৯০ কোটি রুপি)। আইপিএলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত এ ব্যাটসম্যান মৌসুমপ্রতি পান ১৪ কোটি রুপি। এ ছাড়া তাঁর রয়েছে ৪২ কোটি রুপি মূল্যের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। মুম্বাই ও দিল্লিতে তাঁর দুটি বাড়ি রয়েছে। আছে ৬টি বিলাসবহুল গাড়ি, যার মূল্য ৯ কোটি রুপি। এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আগামী কয়েক বছরে ১৪০ শতাংশ হারে আয় বাড়তে পারে কোহলির।

স্টাইলিশ জীবন যাপন করা ধোনি ভারতীয় দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী ক্রিকেটার। ফাইল ছবি
অনেকের মতেই ভারতের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। আইপিএলের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত ক্রিকেটারও। ১১ কোটি ডলার (৭৩৪ কোটি রুপি) মূল্যের আর্থিক সম্পদ ধোনিকে বানিয়ে দিয়েছে দেশের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী ক্রিকেটার। ধোনির বার্ষিক আয় ১ কোটি ২০ লাখ ডলার। এ ছাড়া আইপিএল থেকে মৌসুমপ্রতি আয় ১৫ কোটি রুপি। তাঁর গ্যারেজে রয়েছে বিলাসবহুল গাড়ি ও বাইকের প্রাচুর্য, যার আনুমানিক মোট মূল্য প্রায় ২৫ কোটি রুপি। এ ছাড়া ভারতের নানা জায়গায় ব্যক্তিগত বিনিয়োগ রয়েছে ধোনির।
২০১৩ সালে ব্যাট তুলে রাখলেও ভারতে আয় বিচারে শচীন টেন্ডুলকারকে টপকে যেতে পারেননি কোনো ক্রিকেটার। সর্বকালের অন্যতম সেরা এ ব্যাটসম্যান ১৬ কোটি ডলার (১ হাজার ৬৬ কোটি রুপি) মূল্যের আর্থিক সম্পদ নিয়ে শীর্ষে। বিসিসিআই থেকে তাঁর আয় ২ কোটি রুপি এবং নানা রকম এনডোর্সমেন্ট থেকে আসে আরও ১৫ কোটি রুপি। দেশি-বিদেশি ২৪টি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করছেন তিনি। এ ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়েও নানা রকম প্রজেক্ট-পলিসির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন শচীন টেন্ডুলকার। সূত্র: স্পোর্টস ক্রীড়া।